1. brigidahong@tekisto.com : anthonyf69 :
  2. mieshaalbertsoncqb@yahoo.com : delorismoffitt :
  3. : admin :
  4. sjkwnvym@oonmail.com : joellennnx :
  5. gertrudejulie@corebux.com : modestaslapoffsk :
  6. cristinamcmaster6222@1secmail.com : renetrotter53 :
সাফল্যের গল্প: টেসলা - ডিবিসি জার্নাল২৪
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
দুর্গাপুরে চুল কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় যুবককে পাশবিক নির্যাতন বৃষ্টি প্রার্থনায় পুঠিয়ায় ইসতিসকার নামাজ আদায় রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে গোলস করতে নেমে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু দুর্গাপুরে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের  তিন হেভিওয়েট নেতা দুর্গাপুরে ১২ প্রার্থীরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা দুর্গাপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ  সিরাজগঞ্জে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মৎস্য আড়ৎ উচ্ছেদ ও জমি ফেরতের দাবীতে মানববন্ধন সিরাজগঞ্জে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিম রেজা নূর দিপু চৌহালীতে সাত বছর পর শিশু ধর্ষণ ও হত্যার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার -২ দুর্গাপুরে কিশোর ও কিশোরী ক্লাবের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

N

সাফল্যের গল্প: টেসলা

  • আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: ব্যর্থতার অনেক গল্প থেকেও অনেক সময় সফলতার গল্পের সূচনা হয়। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সফল গাড়ি নির্মাতা ব্র্যান্ড টেসলার গল্পও শুরু হয়েছিল আরেকটি ব্র্যান্ডের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে।

৯০ এর দশকের শেষদিকে বিদ্যুৎচালিত একটি গাড়ির মডেল অনেক আলোচনায় আসে। ‘ইভি ওয়ান’ নামের সেই বিদ্যুৎচালিত গাড়ির নির্মাতা ছিল আমেরিকান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেনারেল মটরস। সেবারই প্রথম বড় কোনো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বড় আকারে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বাজারে আনার পরিকল্পনা করে।

তবে ইভি ওয়ান নিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা কয়েক বছরের মধ্যেই হঠাৎ থেমে যায়। ২০০৩ সালে জেনারেল মটরস ঘোষণা করে যে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজার কিংবা চাহিদা নেই। ফলে তাদের বিদ্যুৎচালিত গাড়ি ইভি ওয়ান সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং মজুদ হিসেবে ইতিমধ্যে তৈরি হওয়া এই মডেলের যত গাড়ি ছিল, সবই স্ক্র্যাপইয়ার্ডে জড়ো করে ভেঙে ফেলা হয়।

এতে বিদ্যুৎচালিত এই গাড়ির সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ নিয়ে যারা স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারা সবাই হতাশ হন। প্রতিবাদ হিসেবে তারা ‘হলিউড ফরেভার সেমিট্রি’ নামের ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত এক কবরস্থানে সমবেত হয়ে ‘ইভি ওয়ান’ এর মৃত্যুতে ছদ্ম এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করেন।

‘ইভি ওয়ান’ কেন বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হল, তার পেছনে থাকা বিভিন্ন কারণ নিয়ে ডকুমেন্টারি বানান আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস পেইন। ২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া সেই ডকুমেন্টারিতে অবশ্য কিছু আশার আলোও দেখানো হয়েছিল। দেখানো হয়েছিল সে সময় উন্নত হতে থাকার টেসলা রোডস্টার নামের একটি বিদ্যুৎচালিত গাড়ি, যেটা বাজারে আসে এরও দুই বছর পর ২০০৮ সালে।

# টেসলার শুরু

২০০৩ সালে জেনারেল মোটরস এর ইভি ওয়ান ব্যর্থতার ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সে বছরই ‘টেসলা মটরস’ নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন সিলিকন ভ্যালির দুজন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন এবারহার্ট এবং মার্ক টার্পেনিং।

এবারহার্টের উদ্দেশ্য ছিল তিনি এমন একটি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করবেন, যেটা একই সাথে হবে একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। আর সেই প্রতিষ্ঠান ব্যাটারি, কম্পিউটার সফটওয়্যার এবং মোটর, এই ৩ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে।

টেসলা প্রতিষ্ঠার আগে এবারহার্ট এবং টার্পেনিং এর ই-বুকের ব্যবসা ছিল। তারা সেই ব্যবসা ১২৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি নির্মাণের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন টেসলা।

বিখ্যাত সার্বিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই কোম্পানির নামটি রাখা হয়েছে।

কয়েক মাস পরে তৃতীয় কর্মী হিসেবে টেসলায় যোগ দেন ইয়ান রাইট। এবং ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠানের ‘চিফ টেকনিকাল অফিসার’ হিসেবে যোগ দেন জে. বি. স্ট্রাউবল। এবং এর মধ্যে ইলন মাস্কও একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন।

২০০৯ সালে টেসলার ‘সহ-প্রতিষ্ঠাতা’ কে বা কারা, তা নিয়ে একটি মামলার নিষ্পত্তি হয়। সেই মামলার রায় হিসেবে সিদ্ধান্তে আসা হয় যে এবারহার্ট এবং টার্পেনিং ছাড়াও রাইট, স্ট্রাউবল এবং মাস্ক, এই ৫ জনই নিজেদেরকে টেসলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করতে পারবেন।

শুরু থেকেই টেসলার পরিকল্পনা ছিল খুবই সরল, কিন্তু সম্ভাবনাময়।

প্রথমত, তারা গাড়িতে ব্যবহারের জন্যে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি প্রযুক্তি উন্নত করে তোলার দিকে গুরুত্ব দেয়। কারণ তাদের আশা ছিল এ ধরনের ব্যাটারি সময়ের সাথে সাথে সাশ্রয়ী এবং শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

অন্যদিকে জেনারেল মটরস সহ এর আগে যাদের বিদ্যুৎচালিত গাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, তাদের অনেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারির মত পুরনো ধাঁচের প্রযুক্তির ওপর ভরসা করেছিল।

দ্বিতীয়ত, তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুরুতেই অনেক দামি এবং উন্নত প্রযুক্তির স্পোর্টস কার বাজারে আনার। এতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি নিয়ে সে সময় মানুষের মধ্যে নেতিবাচক যেসব ধারণা ছিল, তা দূর হবে।

প্রথম দিকের উন্নত সেসব গাড়ি বিক্রি করে পাওয়া মুনাফার অর্থ দিয়ে পরবর্তীতে ক্রেতাদের জন্য সাশ্রয়ী গাড়ি বাজারে আনাটাও ছিল তাদের উদ্দেশ্য।

এবং তৃতীয়ত, সময়ের সাথে সাথে গাড়ি উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল টেসলার। এভাবে সেডান গাড়ি ছাড়াও বিদ্যুৎচালিত মিনি-ট্রাকের মত বড় আর ভারি যানবাহন তৈরি সম্ভব হবে।

এর বাইরে সোলার প্যানেলের মত প্রযুক্তির সাহায্যে বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সংরক্ষণ সিস্টেম বাজারে আনার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। টেসলার আরেকটি লক্ষ্য ছিল স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চলার প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা এবং তা উন্নত করা।

# ইলন মাস্কের বিনিয়োগ সংগ্রহ এবং সিইও পদ গ্রহণ

শুরুতেই ইলন মাস্ক টেসলায় ৬.৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন এবং হয়ে ওঠেন প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান।

টেসলা রোডস্টার নামে তাদের প্রথম গাড়ি তৈরি করছিল তখন। তবে তাদের অনুমানের তুলনায় রোডস্টার নির্মাণের খরচ অসম্ভব রকমের বেড়ে যায়। এতে একটা সময় টেসলার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

এই সংকট কাটাতে মাস্কের তত্ত্বাবধানে ২০০৬ সালে টেসলায় বিনিয়োগ করেন গুগলের দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেইজ। এছাড়াও অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইবে (eBay) এর সাবেক প্রেসিডেন্ট জেফ স্কোল বিনিয়োগ করেন এই প্রতিষ্ঠানে।

২০০৭ সালের মধ্যে, মূলত মাস্ক এর চেষ্টাতেই প্রতিষ্ঠানটি ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ সংগ্রহ করে। তবে তখনো এর সিইও ছিলেন এবারহার্ট।

২০০৭ সালেই মাস্ক এর নেতৃত্বে টেসলার পরিচালনা পর্ষদ এবারহার্টকে সিইও পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। তিনি সিইও থেকে সাময়িকভাবে ‘প্রেসিডেন্ট অফ টেকনোলজি’ পদে যোগ দেন এবং পরের বছর, অর্থাৎ ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যান। একই সময়ে টেসলা ছাড়েন আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা টার্পেনিং। পরবর্তীতে এবারহার্ট মাস্কের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে বের করে দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

এবারহার্ট সিইও পদ ছাড়ার পরে সাময়িক ভাবে দুজন কর্মকর্তা এই পদে বসেন। তবে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার খুব বেশি উন্নতি ঘটাতে পারেননি তারা। ফলে ২০০৮ সালের অক্টোবরে টেসলার সিইও হন মাস্ক, এবং এখনো তিনি এই পদে বহাল আছেন।

সিইও হবার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের অবস্থা বদলানোর জন্য মাস্ক বড় ধরনের কিছু পদক্ষেপ নিতে থাকেন। যেমন তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেই ২৫ শতাংশ কর্মীদেরকে ছাঁটাই করেন, ত্রুটি থাকায় ইতিমধ্যেই গ্রাহকদের হাতে চলে যাওয়া কিছু রোডস্টার ফেরত আনেন, মার্সিডিজ বেঞ্জ, টয়োটা এবং প্যানাসনিকের মত প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেন।

প্যানাসনিকের সঙ্গে এখনো ব্যাটারি নির্মাণ এবং গবেষণার চুক্তি রয়েছে টেসলার।

# রোডস্টার

২০০৮ সালে টেসলা বাণিজ্যিকভাবে রোডস্টার উৎপাদন শুরু করে। টেসলার প্রথম গাড়ি ছিল রোডস্টার, যেটার নকশা এবং নির্মাণের কাজ তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে অন্যান্যদের সঙ্গে ইলন মাস্কও ছিলেন।

রোডস্টারের ডিজাইনার এবং উদ্ভাবকদের উদ্দেশ্য ছিল ইতিমধ্যে তৈরি আরেকটি গাড়ির চেসিস বা বডিতে টেসলার ইঞ্জিন এবং ব্যাটারি যুক্ত করা। তারা আশা করছিলেন এতে গাড়ি উৎপাদনের খরচ কমে আসবে অনেকটাই।

সেই আরেকটি গাড়ি ছিল ব্রিটিশ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘লোটাস’ এর গাড়ির মডেল ‘লোটাস এলিস’।

কিন্তু রোডস্টার নির্মাণের কাজ যত আগাতে থাকে, ততই এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কাস্টমাইজ করার প্রয়োজন পড়তে থাকে। রোডস্টার নির্মাণ শেষে দেখা যায়, এর মধ্যে লোটাস এলিসের মাত্র ৭% যন্ত্রাংশ আছে।

রোডস্টার এর গিয়ার বক্স তৈরি করেছে ‘বোর্গ ওয়ার্নার’ নামের মিশিগানের একটি প্রতিষ্ঠান। ব্রেক আর এয়ারব্যাগ তৈরি করেছে জার্মান প্রতিষ্ঠান সিমেন্স। এবং ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা হয়েছে তাইওয়ান থেকে।

অর্থাৎ দেখতে অনেকটা এলিসের মত হলেও দুটি গাড়ির ভেতরের কাঠামো একেবারেই আলাদা।

২০১২ সালে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে তৈরি হয়েছে প্রায় ২৫০০ রোডস্টার। বাজারে আসার পরে এটাই হয় প্রথম কোনো সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত গাড়ি যেটা একবার চার্জ দেয়ার পরেই একটানা ৩২০ কিলোমিটার বা ২০০ মাইল চলতে পারত। এবং প্রতিটা রোডস্টারে ছিল ৯৯২ পাউন্ডের লিথিয়াম কোবাল্ট অক্সাইড ব্যাটারি।

টেসলার কর্মকর্তারা যেমনটা ভেবেছিলেন সেভাবেই রোডস্টার বিদ্যুৎচালিত বা ইভি গাড়ির প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পেরেছিল।

২০১৮ সালে ফ্যালকন হেভি নামের রকেটে করে এই মডেলের একটি গাড়ি মহাশূন্যে পাঠানো হয়। রাস্তায় চলার জন্য বাজারে আসা কোনো গাড়ি মহাকাশের গভীরে পাঠানোর ঘটনা এটাই প্রথম।

সম্প্রতি টেসলা ঘোষণা করেছে যে রোডস্টার এর সেকেন্ড জেনারেশনের গাড়ি তৈরিতে কাজ করছে তারা এবং এ বছরই গাড়িটি বাজারে আসার কথা।

# টেসলার বিভিন্ন অর্জন এবং বাজারে আনা নতুন মডেল

ইলন মাস্ক দায়িত্ব গ্রহণের পর খুব দ্রুতই বাড়ছিল টেসলার আকার। ২০০৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে টেসলা ১৮৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সংগ্রহ করে, যার মধ্যে ইলন মাস্কের ছিল ৭০ মিলিয়ন ডলার। একই বছরের জুনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যানার্জি’র কাছ থেকে ৪৬৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় টেসলা, যা পরবর্তীতে তারা সুদসহ পরিশোধ করে।

২০১০ সালে টেসলা একটি পাবলিক কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫৬ সালে ফোর্ড পাবলিক কোম্পনি হওয়ার পর সেবারই প্রথম আমেরিকার কোনো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পাবলিক কোম্পানি হিসেবে উঠে আসে।

২০১২ সালে টেসলা বাজারে আনে তাদের দ্বিতীয় গাড়ি ‘মডেল এস লাক্সারি সেডান’। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে নরওয়েতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ি হিসেবে স্বীকৃতি পায় ‘মডেল এস’। এর মাধ্যমেই প্রথম কোনো দেশে এক মাসে তেলের গাড়ির চেয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি বেশি বিক্রির রেকর্ড সৃষ্টি হয়।

২০১৫ এবং ২০১৬ সাল জুড়ে বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক বিক্রিত বৈদ্যুতিক বা ইভি গাড়ি ছিল মডেল এস।

২০১৪ সালে ‘টেসলা অটোপাইলট’ নামের ‘ড্রাইভার অ্যাসিস্টেন্স সিস্টেম’ গড়ে তোলে প্রতিষ্ঠানটি। সে বছরের সেপ্টেম্বর থেকে উৎপন্ন টেসলার সব গাড়িতেই এই সিস্টেম যাতে সাপোর্ট করে সেজন্য প্রয়োজনীয় সেন্সর এবং সফটওয়্যার যুক্ত করা শুরু হয়।

২০১৫ সালে বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্যে ‘টেসলা পাওয়ারওয়াল’ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘টেসলা পাওয়ারপ্যাক’ নামের ব্যাটারি প্যাক বাজারে আনে। বাজারে আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই টেসলা ৮০০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার পায়।

শেষ পর্যন্ত যাতে প্রচলিত জ্বালানিতে চলা গাড়ির তুলনায় তাদের বিদ্যুৎচালিত গাড়ির দাম কমে আসে, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি, চীনে একটি এবং জার্মানিতে একটি গিগাফ্যাক্টরি নির্মাণ করে টেসলা। নিউ ইয়র্কে অবস্থিত একটি ফ্যাক্টরি ছাড়া বিপুল আকারের এসব গিগাফ্যাক্টরির প্রতিটাতেই গড়ে দশ হাজার বা তার চেয়েও বেশি কর্মী কাজ করে।

২০১৬ সালে টেসলা বাজারে আনে মডেল থ্রি। ইউরোপ-আমেরিকার সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকা প্রথম কোনো গাড়ি এটিই।

২০১৭ সালের শেষ নাগাদ আমেরিকার বাজারে ফোর্ড এর চেয়ে টেসলার মার্কেট ভ্যালু বেড়ে যায়।

বর্তমানে মডেল এস, মডেল এক্স, মডেল থ্রি এবং মডেল ওয়াই নামের চারটি মডেলের গাড়ি বাজারে রয়েছে টেসলার। এছাড়াও রয়েছে ‘টেসলা সেমি’ নামের একটি সেমি-ট্রাক। অদূর ভবিষ্যতে সাইবারট্রাক নামের একটি পিকআপ বাজারে আনার কথা আছে প্রতিষ্ঠানটির।

# যুক্তরাষ্ট্র ও বাইরে যেভাবে পরিচালিত হয় টেসলার ব্যবসা

টেসলার ব্যাপারে মজার একটা তথ্য হল, প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিজ্ঞাপনের পেছনে কোনো অর্থ খরচ করে না।

অন্যান্য গাড়ি নির্মাতাদের চাইতে টেসলা আরেকটা দিক দিয়ে ভিন্ন। সেটা হল, টেসলা গাড়ি বিক্রির জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজড ডিলারশিপের ওপর নির্ভর করে না। পরিবর্তে টেসলা সরাসরি তাদের ওয়েবসাইট এবং কোম্পানির মালিকানাধীন দোকানের মাধ্যমে যানবাহন বিক্রি করে।

তারাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা সরাসরি গ্রাহকদের কাছে গাড়ি বিক্রি করে।

২০০৯ সালে ইউরোপে টেসলার প্রথম স্টোর খোলা হয় লন্ডনে। তবে ইউরোপ টেসলার আঞ্চলিক সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডে।

২০১০ সালে জাপানে তাদের প্রথম শোরুম খোলে। ২০১৩ সালের মধ্যেই হংকং, বেইজিং এবং সাংহাইতে শোরুম এবং সার্ভিস সেন্টার চালু হয়। ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতে দুটি শোরুম এবং একটি সার্ভিস সেন্টার খোলা হয়। একই বছর তাইওয়ানে তাদের প্রথম সার্ভিস সেন্টার এবং শোরুম উদ্বোধন হয়।

বর্তমানে বিক্রি এবং প্রদর্শনের জন্যে ৩৫টিরও বেশি দেশে প্রায় ৪০০টি দোকান এবং গ্যালারি রয়েছে টেসলার।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই টেসলা সবচেয়ে বেশি গাড়ি বিক্রি করে চীনে। গাড়ি বিক্রি করে টেসলা যত আয় করে, তার ২৬% আসে চীন থেকে এবং ৪৫% আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

# বিদ্যুৎচালিত গাড়ির প্রসারে টেসলার অবদান ও ভবিষ্যৎ

সারা বিশ্বে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে টেসলার প্রচুর অবদান রয়েছে। গাড়ি নির্মাণ ও বিক্রির প্রচলিত পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এনেছে তারা।

বড় আকারের টাচ স্ক্রিন, ড্রাইভার অ্যাসিস্টেন্স সিস্টেম এবং বিনামূল্যের সফটওয়্যার আপডেটের নতুন ধরনের অনেক সুবিধাও প্রথম বারের মত এনেছে তারা।

টেসলা তাদের প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলিকেও লাইসেন্স এর মাধ্যমে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দেয়। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজার বড় করে তোলার উদ্দেশ্যেই তারা এমনটা করে।

অতি সম্প্রতি ৬৬.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান গাড়ি নির্মাতা ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী রন ব্যারনের ধারণা, ২০৩০ এর মধ্যেই টেসলার মার্কেট ভ্যালু ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যেতে পারে।

আরো সংবাদ পড়ুন

Designed by: ATOZ IT HOST