কায়েস কাওছার, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০বিঘা ফসলী জমি দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা মৎস্য আড়ৎ উচ্ছেদ ও জমি ফেরতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে জমির মালিকরা। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক সংলগ্ন সলঙ্গার রামারচর আঞ্চলিক সড়কে এ  সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত উক্ত সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে জমির মালিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুসরাত জাহান। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুস ছাত্তার, জমির মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ ছদরুল আলম, সরোয়ার সরকার, জামাল মণ্ডল, আবু হানিফ, ইকবাল হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রাজিমূল ইহসান, নজরুল ইসলাম ও আবু সাঈদ প্রমুখ। এছাড়াও জমির মালিকদের পরিবারের সদস্যসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বাণিজ্যিক বন্দর ও ইতিহাস খ্যাত সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় প্রভাবশালী আব্দুল হাই সরকারের নেতৃত্বে অসাধু একটি সিন্ডিকেট চক্র এলাকার সহজ সরল ও নিরীহ জমির মালিকদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে কতিপয় ব্যক্তিদের লোভে ফেলে ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০ বিঘা ফসলি জমি জোরপূর্বকভাবে দখল করে গড়ে তোলেন ‘কুতুবের চর সমবায় মৎস্য আড়ৎ’। পরিকল্পনাবিহীন ও প্রকৃত জমির মালিকদের সাথে সমন্বয় না করে অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি অনুমোদনহীনভাবে মৎস্য আড়তটি গড়ে তুলে সংঘবদ্ধ চক্রটি পজিশনসহ কাটা সরবরাহের নামে জন প্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে  কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এতে জমির প্রকৃত মালিকরা যেমন সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে। ঠিক একইভাবেই সরকারও লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছেন। অপরদিকে সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা না করে বরফ মিল স্থাপন করায় বরফ মিলের লবণাক্ত পানি প্রবাহিত হয়ে আড়তের আশেপাশের জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি মালিকানাধীন জায়গায় রোপনকৃত বিপুল পরিমাণ বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে। এছাড়াও সংঘবদ্ধ এই চক্রটি জমির প্রকৃত মালিকদের সাথে বৈধ চুক্তিপত্র না করে অবৈধ পন্থায় ভুয়া ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে মৎস্য আড়তটি অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অবৈধ মৎস্য আড়তটি বন্ধ করে মালিকদের জমি ফেরতের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবগত করা হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। এই সংঘবদ্ধ চক্রের কবল থেকে জমিগুলো উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন জমির মালিকরা। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের পরও প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসুচি দিবেন বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন জমির মালিকরা।   এবিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, সলঙ্গার কুতুবেরচর মৎস্য আড়তটি অবৈধ। আমরা বেশ কয়েকবার তাদের ডেকে আড়তটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। আড়ত কমিটি আমাদের কাছে সময় চেয়েছে। সরকারি বিধিমোতাবেক মৎস্য আড়ত পরিচালনার জন্য সরকারের নামে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা আজও দেয়নি। এ বিষয়টি জেলার সমন্বয় কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়েছিল এবং এ সংক্রান্ত ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জমির মালিকসহ সাধারণ মানুষের যেন কোন ক্ষতি  না হয় সেদিকে প্রশাসন নজর রাখবে। সেইসাথে সরকারের নীতিমালার আওতায় না আসলে মৎস্য আড়তটি উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।