ডিবিসি জার্নাল২৪.কম, নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্নজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগদানের বিরোধীতাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীতা বলে মনে করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্র-সিবিআইআর।
সিবিআইআর এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলো ফের মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠছে। এই অপশক্তিগুলো কেবল মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকেই নস্যাৎ করতে উদ্যত নয়; তাঁরা বাংলাদেশেকে বন্ধুহীন-বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করতেও অতিমাত্রায় সক্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা ও বিভেদ সৃষ্টির এই অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে দেশের অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল মানুষদের মতো বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্র (সিবিআইআর) গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইতিহাসের এক যুগ সন্ধিঃক্ষণে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতি যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে অধীর অপেক্ষায় তখন এই অপচেষ্টাকারীরা পাকিস্তানের পরাজিত সেই শক্তির প্রতিভূ হয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে তৎপর।
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি, স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে মহাসমারোহে উদযাপনে সরকার এর গৃহীত কর্মসূচি বানচালে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে। এই অপচেষ্টাকারীদের পুরোভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কয়কেটি সংগঠন। এই সংগঠনগুলো বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ বিতর্কিত র্কমসূচি পালন করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর। এরা এখন মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধান মিত্র চিরবন্ধুপ্রতীম ভারতের সঙ্গে বৈরিতা সৃষ্টির অপচেষ্টা অতি সক্রিয়।
আমরা গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে অনুসন্ধানে জেনেছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির প্রত্যক্ষ-পরোক্ষে মদদেই এই সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন অপচেষ্টায় মেতে উঠেছেন। ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ চিরবন্ধুপ্রতীম বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মাঝে অকৃত্রিম এক সেতুবন্ধন রচনায় নিবেদিত সিবিআইআর অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, গত ১২ মার্চ ২০২১ তথাকথিত ‘বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ’ এর ব্যানারে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এক বিক্ষোভ মিছিল হয়। যেখানে বক্তারা অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর রাষ্ট্রীয়ভাবে আমন্ত্রিত অনুষ্ঠানে অতিথি ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফর প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমন প্রতিহত করার ঘোষণা প্রকারান্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মাহুতি দেওয়া অগণিত ভারতীয় বীর সেনাদের প্রতিও চরম অশ্রদ্ধা।
সিবিআইআর মনে করে, এই ধরনরে অপততপরতা যেভাবে বেড়েই চলছে, তাতে আমরা স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে এবং দেশকে বন্ধুহীন করবার এক সুগভীর নীলনকশার জাল বিস্তারই তাদের লক্ষ্য। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব-কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি রচিত। সেই নীতি ও আদর্শকে অবলম্বন করেই বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতীম ভারতসহ অপরাপর রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পথে হাটছে। আঞ্চলিক এই স্থিতিশীলতাই চক্রান্তকারীদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্রের পরিচালক শাহীদুল হাসান খোকন বলেন, আমরা মনেকরি এই অপশক্তিগুলো যে দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে চক্রান্তের মুলোৎপাটন করা অত্যন্ত জরুরি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে যে সম্বৃদ্ধি ও স্বাতন্ত্র্য নিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাকে অর্থবহ ও টেকসই করতেও এসব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা জরুরি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারকে বিশৃঙ্খলা ও অপতৎপরতায় লিপ্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।