ডিবিসি নিউজ ডেস্ক: বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির দিনে আজ শ্রদ্ধাভরে বীর সন্তানদের স্মরণ করছে গোটা জাতি। হৃদয়ের সব ভালোবাসা উৎসর্গ করছে তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। লাখো শহীদের রক্তস্নাত বিজয়ের বাঙালির গৌরবের বাঁধভাঙা আনন্দের সঙ্গে লাখো স্বজন হারানোর শোকে ব্যথাতুর-বিহ্বল হওয়ার দিনও আজ।
পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের কুহেলিকা ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে বিজয়ের প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল বাংলাদেশের শিশির ভেজা মাটি। যাদের রক্তের বিনিময়ে দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।
মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীতে সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করছে জাতি। তবে অন্যান্য বারের চেয়ে এবারের আয়োজনটা ভিন্ন। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে বীরদের স্মরণ করা হচ্ছে। অন্য বছর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান সাভারে গিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তবে করোনা মহামারীর কারণে অন্য অনেক রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির মতো এবারের বিজয় দিবসের কর্মসূচিও সীমিত করে আনতে হয়েছে।
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ (প্যারেড) এবার হচ্ছে না। বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
সকাল সাড়ে ৬টার পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদ মুক্তি সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষেও শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রধান বিচারপতি ও তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠতে থাকে শহীদ বেদী।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভোরে সূর্যোদয়ের ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে। সকাল ৯টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দেন জ্যেষ্ঠ নেতারা।