নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভা শাখা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি ও কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার রাতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার তাঁর ফেসবুক আইডিতে এ সম্পর্কিত একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবে কি কারণে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে তা বিস্তারিত লেখেননি।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের নব-গঠিত কমিটি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৯ মার্চ রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সন্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি আজাহার আলী ও সাধারন সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফের সমন্বয়ে ঘোষিত কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস. এম. কামাল হোসেনের নির্দেশে আদিষ্ট হয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কমিটির সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তবে কি কারণে কমিটি স্থগিত করেছে তা তিনি জানাননি।

গত ৯ মার্চ দুর্গাপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকলেও গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে আজাহার আলীকে সভাপতি ও শরিফুজ্জামান শরিফকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রবীণ ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে থাকেন।

নবগঠিত কমিটির সভাপতি আজহার আলী ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফ বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁরা দু’জনই বিদ্রোহী প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) আব্দুল মজিদের পক্ষে কঠোর অবস্থানে ছিলেন। এমনকি বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ও নির্বাচনে নাশকতা কর্মকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগে তাদের দুজনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিলেন। এমনকি নির্বাচন চলাকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, যেসব নেতা বিগত উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে আনা হবে না। এমন নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা দলের ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করতে ও নিজের রাজনৈতিক ভিত মজবুত করতে গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে নিয়মবহির্ভূতভাবে এই দুই নেতাকে সভাপতি ও সম্পাদক ঘোষণা দেন। সম্মেলনের পরদিনই আওয়ামী লীগ নেতা সুকুমার কবিরাজ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে লিখিত আবেদন জানান।

এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা মুঠোফোনে কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।