
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে দেশটিকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যদি মানচিত্রে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তবে রাষ্ট্রীয় মদদের সন্ত্রাসবাদ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাজস্থানের অনুপগড়ে সেনাঘাঁটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারতীয় বাহিনী এবার আর ধৈর্য দেখাবে না। যদি ইসলামাবাদ সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো বন্ধ না করে, তবে ‘অপারেশন সিঁদুরের’ দ্বিতীয় ভার্সন খুব বেশি দূরে নয়।”
সেনাপ্রধান আরও বলেন, “‘অপারেশন সিঁদুরে ১.০’ এ আমরা ধৈর্য দেখিয়েছি, কিন্তু এবার সেই সংযম দেখানো হবে না। পাকিস্তানকে ভাবতে হবে তারা মানচিত্রে থাকতে চায়, নাকি হারিয়ে যেতে চায়।”
এ সময় জওয়ানদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন তিনি। তাদের উদ্দেশে দ্বিবেদী বলেন, “ভগবান চাইলে শিগগিরই তোমাদের একটি সুযোগ আসবে।”
এর আগে শুক্রবারই ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান অমর প্রীত সিং দাবি করেন, মাস পাঁচেক আগে উত্তেজনা আর পাল্টাপাল্টি আক্রমণের মধ্যে পাকিস্তানের এফ-১৬ ও জেএফ-১৭ মডেলের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি তার বক্তব্যের পরই আসে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর ভারতে সাধারণ নাগরিকদের ওপর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় হামলা।
ওই ঘটনার পর থেকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। ৭ মে ভারতীয় জঙ্গিবিমান পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায়, যেগুলোকে নয়া দিল্লি ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ বলে উল্লেখ করে।
এর জেরে দুই দেশের মধ্যে জঙ্গিবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামান দিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। ১০ মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত বহু প্রাণহানি হয়।
ভারত পরে জানায়, হামলায় জড়িত তিন ‘সন্ত্রাসীকে’ মেরে ফেলা হয়েছে এবং তাদের পাকিস্তানি পরিচয়ের প্রমাণ রয়েছে। তবে পাকিস্তান এ দাবি অস্বীকার করে একে ‘বানোয়াট’ বলে মন্তব্য করেছে।
কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত-পাকিস্তান ইতোমধ্যেই তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দুটিতে জড়িয়ে পড়েছে। এসব দ্বন্দ্ব প্রভাব ফেলেছে বাণিজ্য, ভ্রমণ ও খেলাধুলার ক্ষেত্রেও।
সবশেষ উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত একটি পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত রেখেছে, যেটিকে পাকিস্তান ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে অভিহিত করছে।