নিজস্ব প্রতিবেদক
সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় আসার এখন আর কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এ বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের মালিক হচ্ছে জনগণ। ২০০৯ সালে আমরা সেখানে আরেকটা ধারা যুক্ত করেছি। সেখানে বলা হয়েছে, সামরিক কেউ যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিকে জোর করে ক্ষমতা থেকে হটায় বা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে তবে তা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গণতন্ত্রের নিরাপত্তার জন্যই আমরা এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
‘গণতন্ত্রিক ধারার সুরক্ষার জন্য এই কঠোর আইন করেছি। কেউ যদি হত্যা, ষড়যন্ত্র কিংবা ক্যু করে তবে এই অপরাধে তার বিচার হবে। এ অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।’
এখন নির্বাচন কমিশন মুক্ত। আগে নির্বাচন কমিশন সরকার করত। তবে এখন আইনের মাধ্যমে কমিশন গঠন হয়। এখন তবে এই দাবিটা কেন? আসলে ব্যাপার হচ্ছে সামরিক ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি গঠন করা হয়েছে। তারা অভুত্থান বা জোর করে দখলের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে আমরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে কাজ করি। পরে জনগণ আমাদের কাজে খুশি হয়ে ২০১৪ সালে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসে। এর ফলে আমরা দেশের উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে পারি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিভিশনে টকশোতে সবাই সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলছে এবং বাসায় গিয়ে বলছে তারা কথা বলতে পারে না। এ বিষয়ে তবে আর কি বলার আছে? কিন্তু ১৯৭৫ সাল থেকে ৮৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১৯টা ক্যু হয়েছে। এরপরও কয়েক দফা ক্যু এর চেষ্টা করা হয়েছে। সেসময় তো কোনো মানুষেরই মত প্রকাশের অনুমতি ছিল না।’
কেয়ার টেকার সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করেছিল। এ বিষয় জানার পর আমরা যখন কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলাম তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।” আর আজ তারাই (বিএনপি) কেয়ার টেকার সরকারের দাবি করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। আওয়ামী লীগসহ আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কিছু সংস্কার করি। এর মধ্যে আইডি কার্ড, ছবিসহ ভোটার তালিকা ও ট্রান্সপারেন্ট বক্সের ব্যবস্থা করলাম। তারা (জনগণ) যদি আমার কাজের প্রতি খুশি হয়, ভোট দেয় তবে আমি আবার ক্ষমতায় থাকব। আমরাই মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বজায় রাখতে এ সংস্কার করেছি।‘