নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে শীতকালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বাড়ছে উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ। বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ বৃদ্ধি, গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। পরিবহনের দরজা-জানালা বন্ধ থাকা, সামাজিক অনুষ্ঠান পিকনিক ভ্রমণ বেশি হওয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) রাজশাহী বিভাগের করোনা পরিসংখ্যানে মোট ৫৪ জন সনাক্ত রোগী। কিন্তু গত এক মাসের একই দিনে (১৮ অক্টোবর) এই দিনে সনাক্ত রোগী ছিলো মাত্র ১৬ জন। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সনাক্ত রোগী বেড়েছে সাড়ে তিনগুন। বুধবার এ নিয়ে বিভাগে এখন মোট সনাক্ত রোগী সংখ্যা ২১ হাজার ৮৫০ জন। নতুন করে মোট ৫৪ জন সনাক্ত হয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানান, বিভাগে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩২৭ জনের হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ১৩ জন। এদের মধ্যে ২০ হাজার ২৬৭ জন সুস্থ হয়েছেন। বিভাগজুড়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৫৬২ জন।
সংক্রমাণ বাড়ায় শঙ্কায় রয়েছে রাজশাহীর স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই কার্যকর কোনো টিকা না আসা পর্যন্ত করোনাভাইরাস মহামারীকে বাগে আনা মুশকিল বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মাস্ক ও সামাজিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার সঠিক ব্যবহার করতে হবে মানুষকে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ মণি ভট্টাচার্য বলেন, ‘শীতে তাপমাত্রা ও কম আর্দ্রাতা করোনাভাইরাসকে আরও বেশি সময়ের জন্য বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেবে। সেই সঙ্গে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে করোনাভাইরাসটি মানুষের ওপর আরও বেশি প্রভাব ফেলবে। শীতকালে নিউমোনিয়া, হাঁপানি ও অন্যান্য সর্দিজনিত রোগের কারণে করোনায় মৃত্যুর হারও বাড়তে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে হবে।
মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বাদশা জানান, শীতে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। কয়েকটি কারণে শীতে সংক্রমণ বাড়তে পারে। আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় খুব দ্রুত ড্রপলেট শুকিয়ে যাবে। মাস্ক না পরলে কাশি, সর্দির সঙ্গে আসা জীবাণু বাতাসে বেশি সময় ভাসমান থাকবে। এ ছাড়া শীতে ধুলা বেড়ে যায়। ধুলাও জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করে। মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বলেন, করোনার দ্বিতীয় পর্যায় মোকাবেলায় আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা রোগিদের জন্য আট জেলায় আপাতত এক হাজার ২৮৭টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হবে।
ডা. গোপেন্দ্র নার্থ আরো বলেন, রাজশাহী বিভাগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পাঁচটি ল্যাব রয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীতে দুইটি, বগুড়ায় দুইটি ও সিরাজগঞ্জে একটি। পাঁচটি ল্যাবে প্রতিদিন ৯৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।