নাটোর প্রতিনিধি, গোলাম গাউস
নাটোরের প্রত্যন্ত গ্রামে উঠান বৈঠকে অতি-দরিদ্র অবস্থাা থেকে উত্তরণের গল্প শোনালেন আলট্রা-পুওর গ্রাজুয়েশন কর্মসূচীর গ্রাজুয়েটরা। নলডাঙ্গা উপজেলার ঠাকুর লক্ষিকুল সোনার মোড় এলাকাতে আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। ব্র্যাক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, দরিদ্র অবস্থাা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব সুযোগ গ্রহন করে কর্ম ও সচেতনতার মাধ্যমে ব্যক্তি ও পরিবারিক পর্যায়ে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারেন। জেলা প্রশাসন এই কর্মযজ্ঞে সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ঘাকবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ রোজী আরা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নাদিম সারওয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজিনা খাতুন, জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ পরিচালক ডাঃ অরুনাংশু মন্ডল। উঠান বৈঠকে ব্র্যাকের আল্ট্রা-পুওর গ্রাজুয়েশন কর্মসূচীর গ্রাজুয়েট আকলিমা খাতুনকে ২০১৪ সালে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভেড়া, দশটি মুরগী এবং ঘর করার দশটি টিন প্রদান করা হয়। একই সাথে প্রতি সপ্তাহে ২১০ টাকা এবং আধা কেজি মসুরের ডাল প্রদান করে অভিজ্ঞতা বর্ননা করে তিনি বলেন, এখন আমার আছে দুইটা করে গাই গরু এবং ছাগল। গরু-ছাগল পালনে সহায়ক হিসেবে পাঁচ কাঠা জমিতে ঘাসের আবাদ করছি।কাঁচাঘন পাকা করেছি, বাড়িতে টিউবয়েল, পায়খানা, গরুর ঘরও পাকা। অভাব-অনটন দূর হয়েছে। ছেলেকে পড়ালেখা শিখিয়েছি, নবম শ্রেণীতে বিয়ে দিয়ে নিয়ে আসা বৌমা’কে মাস্টার্স পাশ করিয়েছি। এখন বৌমা ব্র্যাকের ক্যাশিয়ার। ছেলে ব্যবসায় করে। আমার সংসারে এখন সুখের বন্যা। অনুষ্ঠানে সুমী, হাফিজা, ববি, জাহানারা তাদের অবস্থাা উত্তরণের গল্প শোনান। ব্র্যাক নাটোর জেলা কার্যালয়ের সমন্বয়কারী লাইলুন নাহার জানান, ব্র্যাক ২০০৯ সাল থেকে নাটোরে আলট্রা-পুওর গ্রাজুয়েশন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। বিভিন্ন উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে জেলায় ২৭ হাজারের অধিক গ্রাজুয়েট হয়েছেন। সহায়তাপ্রাপ্ত এসব পরিবারে তিন ধরণের উৎপাদনশীল সম্পদ, নিয়মিত ভালো মানের খাবার গ্রহন, স্কুল গমনোপযোগী ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া, নিরাপদ পানি পান করা, টেকসই ঘরে বসবাস, নিয়মিত সঞ্চয় জমা করা ইত্যাদি ১৩টি মানদন্ডে উর্ত্তীর্ণ ব্যক্তিরাই গ্রাজুয়েট।