ডিবিসি নিউজ ডেস্ক: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে সংগঠনকে নিয়ে নতুন ভাবনায় রয়েছেন দলের দায়িত্বশীলরা। তারা সাবেক এই রাষ্ট্রপতির রেখে যাওয়া কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। চেষ্টা করা হচ্ছে দলটিকে নতুন করে গুছিয়ে সামনের দিকে এগোনোর।
জানতে চাইলে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর অনেকে বলেছিলেন জাতীয় পার্টি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু পল্লীবন্ধু এরশাদ-প্রিয় নেতা-কর্মীরা তা ভুল প্রমাণ করেছেন। পার্টিতে কোনো বিভক্তি নেই। সবাই এক ছাতার নিছে। পল্লীবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, দল আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। আগামী দিনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মধ্যে পল্লীবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানা যায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক চরিত্র কী রূপ নেবে, শক্তি-সামর্থ্যে দলটির অবস্থানই বা কেমন হবে এমন প্রশ্ন ছিল রাজনৈতিক মহলে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টি খুব বদলায়নি। দলের কর্তৃত্ব নিয়ে যে দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিয়েছিল তা কাটিয়ে উঠেছে। এখন দল গোছানোর পাশাপাশি নির্বাচনকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা করছে দলটি। নেতা-কর্মীরা জানান, এরশাদের অবর্তমানে জি এম কাদেরের দৃষ্টি এখন সারা দেশে নতুন করে দল গোছানোর দিকে। পাশাপাশি বক্তৃতা-বিবৃতিতে চারপাশের বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এতে সরকারি মহলে কী প্রতিক্রিয়া সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতৃত্বের মনোযোগ মাঠপর্যায়ে সংগঠন গোছানোর দিকে। এ লক্ষ্যে দলের আটজন অতিরিক্ত মহাসচিবের নেতৃত্বে আটটি সাংগঠনিক দল গঠন করে সফর শুরু হয়েছে। জাপার সাংগঠনিক জেলা ৭৭টি। এগুলোর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে ৪৬টিতে। বাকিগুলো আহ্বায়ক কমিটি। মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক জেলাগুলোর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হচ্ছে। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকেও সক্রিয় করা হচ্ছে। দলের দায়িত্বশীলদের পর্যবেক্ষণ-২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ বা ২০১৮ সালের আদলে হবে না। তাই এখন থেকেই দলের সব পরিকল্পনা রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক। এ ছাড়া জাপা এখন জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল। এই অবস্থান ধরে রাখতে কৌশলী ভূমিকা থাকার পাশাপাশি যে কোনো পটপরিবর্তনে দলকে সম্পৃক্ত রাখার বিষয়েও নীতিনির্ধারকরা সতর্ক রয়েছেন।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ যোগ্য প্রার্থীর সন্ধান শুরু করেছে। এ ছাড়া নিজেদের নেতৃত্বে রেখে নতুন একটি নির্বাচনী জোটও গঠনের কথা ভাবছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল জাপার সঙ্গে জোট গঠন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। বিভিন্ন দল, সংগঠনসহ ব্যক্তিপর্যায় থেকে প্রতিনিয়ত জাপায় যোগদান অব্যাহত রয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পর এ নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে দলটির শীর্ষপর্যায়ে।