নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করে সারাদেশে ভাইরাল হওয়া খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মরদেহের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে মরদেহর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক (আরএম্ও) সামিউল ইসলাম শান্ত জানান, শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মরদেহের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ভিসেরা রিপোর্ট আসলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১৪ আগস্ট) সকালে পুলিশ মামুনকে আটকের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে মামুন জানান, খায়রুন নাহারের বাবা-মাসহ আত্মীয়স্বজনরা যোগাযোগ রাখতেন না।খায়রুন নাহারের কলেজের কোনও সহকর্মী তার সাথে ভাবে কথা বলতেন না। মানসিকভাবে খুবই চাপে ছিলেন।
নিহত খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবির উদ্দিন বলেন, অসম বয়সের ছাত্রকে বিয়ে করায় খায়রুন নাহারের কলেজের কোনও সহকর্মী তার সাথে কথা বলতেন না। বাবা-মাসহ আত্মীয়স্বজনরা যোগাযোগ রাখতেন না। বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় খায়রুন নাহার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মামুনের কোনও স্বজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার বাবা মোহাম্মদ আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ। তার চাচা আহম্মদ আলী মেম্বারকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার পর নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, পিবিআই পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ সুপার মহসিনসহ প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পিবিআই পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিন বলেছেন, সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও তদন্ত অগ্রসর হলে এ বিষয়ে পরিস্কার কিছু বলা যাবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেছেন, বিষয়টি আত্মহত্যার মতোই মনে হচ্ছে। সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে যেভাবে ওড়না আগুন দিয়ে পুড়িয়ে খায়রুন নাহারকে তার স্বামী নামিয়েছেন এটা বিশ্বাসযোগ্য। কাপড় এবং ফ্যানের কিছু অংশ পোড়া অবস্থায় দেখা গেছে। তারপরও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত স্বামী মামুন বাইরে থাকাসহ সবগুলো পয়েন্ট মাথায় রেখেই পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে এবং পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।