ডিবিসি নিউজ ডেস্ক: বছরের শেষ সময়ে এসে জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। করোনার মধ্যেই একটি জেলা ও আটটি উপজেলার সম্মেলন শেষ করা হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের ২৫ পৌরসভা এবং আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬১ পৌরসভার ভোটে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ছুটে যাচ্ছেন তৃণমূলে। একইভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলা নির্বাচনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, গত ২৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তৃণমূলের সম্মেলনের ওপর জোর দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলার সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করার তাগিদ দেন।
জানা গেছে, সারা দেশে আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩১ জেলার সম্মেলন হয়েছিল গত মার্চ পর্যন্ত। গত বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩২-এ। গত নভেম্বর থেকে গড়ে বিভিন্ন উপজেলায় ইউনিয়ন সম্মেলন করা হচ্ছে। চলছে উপজেলা সম্মেলনও। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, গত মার্চ মাসে করোনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ, অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা, আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছিলেন। সাংগঠনিক কার্যক্রমের মধ্যে জেলা-উপজেলা সম্মেলন ও কমিটি গঠন বাদ রেখেছিলেন। বছরের শেষ দিকে এসে দলীয় সভানেত্রীর কাছ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলা-উপজেলার সম্মেলন ও কমিটি গঠনের নির্দেশনা পাওয়ার পর তৎপর হয়ে ওঠেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গত এক মাসে আটটি উপজেলা এবং একটি জেলার সম্মেলন শেষ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ ছাড়াও সম্প্রতি সময়ে মেয়াদোত্তীর্ণ যেসব উপজেলার ভোট গ্রহণ করা হয়েছে কিংবা চলছে সেখানে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কেন্দ্রের নেতারা। দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গত সপ্তাহে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। একইভাবে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন যশোরের বাগাড়পাড় উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালান। সম্প্রতি চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যান সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম কবির রাব্বানী চিনু। আগামী ২০ তারিখে রংপুরে যাবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। কিছু দিন আগে পাবনা ও সিরাজগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জামান প্রমুখ। ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কভিডের মধ্যেও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, মাদারীপুরের শিবচর, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সম্মেলন শেষ করেছি। এখন গাজীপুর, রাজবাড়ী এবং মাদারীপুর জেলা সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সময় মতো তারিখ নির্ধারণ করব।
রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অতি সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলা, বগুড়ার আদমদীঘি, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সম্মেলন করা হয়েছে। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ, গাবতলী উপজেলার সম্মেলন এ মাসেই করা হবে। এ ছাড়াও এখন বিভিন্ন ইউনিয়নে সম্মেলন চলছে। উপজেলা এবং পৌরসভার ভোট উপলক্ষে আমরা যারা এমপি নই, তারা মাঠে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি। সব মিলে করোনার মধ্যেও আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি।’ ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিভিন্ন পৌরসভা ভোট নিয়ে আমরা জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা করছি। কিছু উপজেলার সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করা হলেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আপাতত নির্বাচনী সফল ঘরে তোলার কাজ নিয়েই ভাবছি।