ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি এবার আদালত পর্যন্ত গড়ালো। এ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমলী আদালত শিবগঞ্জের বিজ্ঞ বিচারক মো. হুমায়ুন কবীর স্ব-প্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) শিবগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: হুমায়ুন কবীর আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুবুল ইসলামকে (শিক্ষা ও আই টি) তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ ও ২৫ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে মহান বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলার রশিদ সনুকে লাঞ্চিতের যে সংবাদটি প্রকাশিত হলে তা আদালতের নজরে আসে।
ওই সংবাদে বলা হয়, শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বজলার রশিদ সনুকে আতিকুল ইসলাম টুটুল নামক এক ব্যক্তি সংবর্ধনা মঞ্চেই লাঞ্ছিত করেন। যা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে এবং মুক্তিযোদ্ধাদেরকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।
মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাকর ও অশনি সংকেত এবং ফৌজদারী অপরাধ। তাই এ অপরাধটি কাদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে তা শনাক্ত করতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮ এবং ১৯০(১) ৯(সি) ধারায় স্বপ্রনোদীত হয়ে বিজ্ঞ বিচারক তদন্তের নির্দেশ দেন।
ঘটনাটি কার দ্বারা কিভাবে, কেন সংঘঠিত হয়েছে তা তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদনে জানাতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি প্রস্তুতেরও নির্দেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে পত্রিকা সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের জবানবন্দি ও স্থানীয় স্বাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণেরও নির্দেশ প্রদান করা হয় আদেশে।
এ ব্যপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুবুল ইসলাম (শিক্ষা ও আই টি) জানান, আমি তদন্তের নির্দেশ পেয়েছি। মন্তব্যের কিছু নাই। তদন্ত করে যথাসময়ে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনুর বক্তব্য চলাকালে তার মাইক বন্ধের সাথে সাথে মঞ্চে বাকবিতজ্ঞা ও ধাক্কাধাক্কি করেন আতিকুল ইসলাম টুটুল। এর প্রতিবাদে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যানারে ডাক বাংলোর সামনে এক মানববন্ধন আয়োজন করেন বজলার রশিদ সনু।
পরে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ডাক বাংলো চত্তরে সংবাদ সম্মেলন করে আতিকুল ইসলাম টুটুল।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারন পাঠাগারে একই ঘটনায় সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধার ব্যানারে ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিতের ঘটনায় প্রশাসনের তদন্ত দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন বজলার রশিদ সনু।