নিজস্ব প্রতিবেদক: ” লাশ ঘর থেকে তিন দিন পর, রাব্বির লাশ আইছে রে, ওরা ঈদের এক টুকরা গোস্তও খাইতে দিলো না আমার ভাইকে। আমার ভাই রে কেও ফিরিয়ে দে, এমন সব আর্তনাদ কন্ঠে বলছিলেন নিহতের বোন। আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর মুখে একটাই দাবি এই হত্যার ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।
উল্লেখ্য: বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার রাজশাহীর পবা উপজেলার তালগাছি গ্রামে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে না পেয়ে গ্রামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের নাম মো: রব্বানী ওরফে রাব্বি (২৬)। তিনি পবা উপজেলার তালগাছি গ্রামের মো: ইসরাফিল হোসেনের ছেলে। ময়না তদন্তের জন্য রাব্বির লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যার দিকে মারপিটের পর রাব্বিকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষীপুরে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।
মৃতের পরিবার ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, ঈদের দিন বৃহস্পতিবার আনুমানিক সাড়ে ৪ টার দিকে তালগাছি গ্রামের জনৈক জনি তার স্ত্রীকে নিয়ে তালগাছি বিলে ব্রিজের নিকট বেড়াতে যান। এসময় মাধাইপাড়া গ্রামের জীবন ও জাকির নামের দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী জনিকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দেয়। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে উপস্থিত লোকজন উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বেড়াতে আসা জনি তার গ্রামের রাসেল, মিলন, শান্ত সহ আরো কিছু যুবককে সাথে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তালগাছি বিলে এসে জীবন ও জাকিরকে খুঁজতে থাকে।
সেখানে জীবন ও জাকিরকে না পেয়ে তালগাছি গ্রামের রাব্বিকে পেয়ে মারপিট শুরু করে। এসময় রাব্বি দৌড়ে রাস্তার নিচ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে জনি তার সঙ্গীও লোকজন সহ ধাওয়া করে তাকে ধরে আবারও লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এসময় রাব্বির বাবা ইসরাইল সহ গ্রামের লোকজন বাধা দিলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এদিকে লাঠির আঘাতে রাব্বির ডানকানের উপরে মাথায় জখম হলে তাকে আহত অবস্থায় পরিবারের লোকজন প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। পর সেখান থেকে রাতে লক্ষ্মীপুরে বেসরকারি নিউ লাইভ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত অনুমানিক আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার জনি সহ ৮ জনকে আসামী করে পবা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
পবা থানার অফিস ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ পারভেজ জানান, এই ঘটনায় এমটি হত্যা মামলা হয়েছে। এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান।