নিজস্ব প্রতিবেদক :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক কিশোরীর এডিট করা নগ্ন ছবি ভাইরাল করার হুমকি দিয়েছিলো এক যুবক। বলেছিলো, টাকা না দিলে ওই ছবিগুলো ভাইরাল করে দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় মঙ্গলবার রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত অভিযুক্ত যুবককে আট বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সাথে জরিমানা করা হয়েছে নগদ আট লাখ টাকা। অনাদায়ে আরও ৯ মাসের কারাদণ্ড। এ দিন দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান আলাদা দুটি ধারায় অভিযুক্তকে এ সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম শাকিল মন্ডল (৩১)। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার অধিবাসী। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বয়স ১৬ বছর। তার বাবা বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। তিনি একটি সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি শাকিল মণ্ডল ফেসবুক থেকে ওই কিশোরীর ছবি সংগ্রহ করেন। পরে সেগুলো এডিট করেন। এরপর এডিট করা অশ্লীল ছবিগুলো শাকিল তার ফেইক ফেসবুক আইডি থেকে ওই কিশোরীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠান। এরপর ওই কিশোরীর বাবাকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন শাকিল। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দিলে এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেন।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। এরপর রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে এই মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
আদালতে মোট ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৫ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত একটি ধারায় আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। অন্য আরেকটি ধারায় আসামিকে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
রায়ে আদালতের বিচারক উল্লেখ করেছেন, কারাদণ্ডের সাজা একটার পর একটা কার্যকর হবে। এছাড়া জরিমানার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ভুক্তভোগী পাবে। মামলার আসামি পলাতক। তাই তার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়।