1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. dbcjournal24@gmail.com : ডিবিসি জার্নাল ২৪ : ডিবিসি জার্নাল ২৪
  3. leilanigutkowskijr1979@mailbab.com : barrett24e :
  4. iot1@extrastock.pp.ua : bryantming09 :
  5. christygreenfelder1813@mailbab.com : gladisboser1 :
  6. brocksandlin@1secmail.org : joeygodinez :
  7. kratos@AS10.dDNSfree.Com : kratos :
  8. mrsjodywuckertii519@mailbab.com : madge86w5194 :
  9. eloise-carner30@hotmail.com : moheloise366 :
  10. judsonbadillo@1secmail.org : oliverferri444 :
  11. mirjyskp@bfirstmail.com : opheliagholson5 :
  12. test12755392@email.imailfree.cc : test12755392 :
  13. test13436834@mailbox.imailfree.cc : test13436834 :
  14. test14023765@email.imailfree.cc : test14023765 :
  15. test14538755@email.imailfree.cc : test14538755 :
  16. test15775925@mail.imailfree.cc : test15775925 :
  17. test16236888@mail.imailfree.cc : test16236888 :
  18. test23094173@email.imailfree.cc : test23094173 :
  19. test23487925@mail.imailfree.cc : test23487925 :
  20. test23634997@email.imailfree.cc : test23634997 :
  21. test24550266@email.imailfree.cc : test24550266 :
  22. test30309026@mailbox.imailfree.cc : test30309026 :
  23. test30346357@mail.imailfree.cc : test30346357 :
  24. test31294844@email.imailfree.cc : test31294844 :
  25. test33678668@inboxmail.imailfree.cc : test33678668 :
  26. test35148260@mail.imailfree.cc : test35148260 :
  27. test37683532@mail.imailfree.cc : test37683532 :
  28. test3794188@email.imailfree.cc : test3794188 :
  29. test39960829@mailbox.imailfree.cc : test39960829 :
  30. test41907244@email.imailfree.cc : test41907244 :
  31. test42327638@inboxmail.imailfree.cc : test42327638 :
  32. test43965465@mail.imailfree.cc : test43965465 :
  33. test45567104@mailbox.imailfree.cc : test45567104 :
  34. test47741025@mail.imailfree.cc : test47741025 :
  35. test6676544@email.imailfree.cc : test6676544 :
  36. test7920365@inboxmail.imailfree.cc : test7920365 :
  37. test8951644@mailbox.imailfree.cc : test8951644 :
রাজনৈতিক সংগঠনের মতো তৎপর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস! - ডিবিসি জার্নাল২৪
সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন

Categories

রাজনৈতিক সংগঠনের মতো তৎপর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস!

  • আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: প্রতিটি দেশের কূটনৈতিক শিষ্টাচার আছে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে কিছু নিয়ম-নীতি মেনেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা সার্বজনীন। কিন্তু কখনো-কখনো বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ এই সব নিয়মের তোয়াক্কা করে না। নিজ দেশের স্বার্থ হাসিলে এবং আজ্ঞাবহ সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টায় তারা লিপ্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পোস্ট করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশটির দূতাবাসের এমন আচরণ অনেকটা রাজনৈতিক সংগঠনের মতো।

সম্প্রতি বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব) নিয়ে ‘‘ডেথ স্কোয়াড’: ব়্যাবের ভেতরের কথা’’ শিরোনামে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। ওই তথ্যচিত্র নিজেদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে মার্কিন দূতাবাস। একইসঙ্গে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথাও বলছে।

তবে এরইমধ্যে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনটি তৈরি করতে সহায়তা করেছে সুইডেনভিত্তিক অনলাইন পোর্টাল নেত্র নিউজ। এর প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল ও সম্পাদক ডেভিড বার্গম্যান। তবে এই দুই জনের আচরণ এবং কর্মকাণ্ড বিভিন্ন সময় সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা হিসেবে সামনে এসেছে। এই নেত্র নিউজের পরিচালনার ফান্ড আসে মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি (এনইডি) থেকে।

সব দেশের সঙ্গে সমান আচরণ করে না যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ সরকার এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংবাদ প্রচার হতেই পারে। তবে বিষয়টিকে কোনো দেশের দূতাবাস যদি ফেসবুকের মতো জায়গায় তুলে ধরে মন্তব্য করে, তখন তা কূটনৈতিক শিষ্টাচারপরিপন্থি হয় বলে মনে করেন গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্টরা।সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘মিডিয়া একটি রিপোর্ট করলে তা ঠিক হবে কি ভুল হবে; সেটি একটি বিষয়। আর দূাতাবাস হচ্ছে ভিন্ন জিনিস। মিডিয়াতে অনেক প্রতিবেদন হতে পারে, প্রতিবেদনের যাচাই-বাছাই হতে পারে। পক্ষপাতদুষ্টও হতে পারে। কিন্তু সারা দুনিয়ার দূতাবাসগুলো যদি পরস্পরের দেশে এমন আচরণ করে…, কূটনীতিতে গোপন অনেক বিষয় থাকে। তারা একটি দেশ সম্পর্কে গোপনে নিজ দেশে অনেক তথ্য পাঠায়। যেমন বাংলাদেশ সম্পর্কে আমেরিকান দূতাবাস তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তথ্য পাঠায়, সেটি গোপনীয় থাকে।’

‘আর ফেসবুক পেজে দিলে তা প্রকাশ্য হয়ে যায়। এতে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ক্ষুণ্ন হতে পারে। কূটনৈতিক শিষ্টাচারও লঙ্ঘিত হতে পারে। বিষয়টি এভাবেই দেখা উচিত। অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপতো বটেই, কূটনৈতিক নিয়ম-কানুন, শিষ্টাচার এগুলোরও পরিপন্থী,’ যোগ করেন তিনি।

সব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমান আচরণ করে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। প্রশ্ন রেখে অজয়দাশ গুপ্ত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিষয়ে ধনী দেশগুলো এমন আচরণ করে। ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রতিনিয়ত হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এগুলো নিয়ে কত প্রতিবেদন হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে কী যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পররাষ্ট্র দফতরে প্রতিবেদন দেয়? লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে, বহুলোককে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেগুলো কী মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেদের ওয়েবসাইটে দেয়?’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে, নারীদের নির্যাতন করেছে। লুটপাট হয়েছে। সেগুলো কি তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র? পাকিস্তানি বাহিনী মার্কিন অস্ত্র দিয়েই বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। কাজেই সবগুলোই সমানভাবে দেখা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের।’

ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করে মার্কিন দূতাবাসের অতি আগ্রহ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বার্তা সংস্থা ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন বলেন, ‘কোনো দেশে যুক্তরাষ্ট্রের অপছন্দের সরকার থাকলে, তারা যে সরকার ব্যবস্থা চায়। সেটি যদি না হয়, তাহলে সে সরকারকে কীভাবে হটাতে হবে; সেটা আমরা দক্ষিণ আমেরিকা ও আরব বিশ্বে দেখেছি।’

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেজে শেয়ার দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা এটি করেই যাচ্ছে। এগুলো একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ। এটি যে দেশেই করুক না কেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা এ কাজটি করে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা নিজে থেকে এগুলো করেনি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের একটি ছেলে ছিল, সে একসময় খালেদা জিয়ার গণমাধ্যম শাখার সদস্য ছিল। সে প্রশ্ন করেছিল, র‍্যাব নিয়ে ডয়চে ভেলে একটি প্রতিবেদন করেছে, এ ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কী? তখন সেখানে বলা হয়েছে, বিষয়টি আমরা দেখবো এবং বাংলাদেশ সরকারকেও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’

ফরিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা সাধারণভাবে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। আর এখন আমাদের এখানে এগুলো করা হচ্ছে। ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে হচ্ছে এসব। আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে এগুলো হয়ে আসছে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষত, যারা বিরোধীদল তারা এ কাজকে উৎসাহিত করে।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ঘোষিত, তারা জোরেশোরেই বলে যে যেকোনো দেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন এটি তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সেই হিসেবে তারা মনে করে যে এটি তাদের দায়িত্ব। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, তারা নাক গলাচ্ছে’, যোগ করেন তিনি।

সরকারকে বিতর্কিত করাই তাসনিম খলিলের উদ্দেশ্য

অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট করতে সুইডেনে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন তাসনিম খলিল। নিজের অপকর্ম ঢাকতে ২০০৭ সালে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না মন্তব্য করে মানবাধিকারকর্মীদের ক্ষোভ উসকে দিয়েছিলেন তাসনিম। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনের ফাঁকে ব্রিফিংয়ে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে কথা বলেছিলেন তিনি।

অথচ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনকে সন্ত্রাসের রাজত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বিখ্যাত অনুসন্ধানী সাংবাদিক বাটিল লিটনার এই আখ্যা দিয়েছিলেন।

কাতারভিত্তিক আল জাজিরার ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারম্যান’ প্রামাণ্যচিত্রে সহায়তা করেছে তাসনিম খলিল ও ডেভিড বার্গম্যান। তারাই আবার ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রে সহায়তা করেছেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘যারা এসব করেছে, তারা বাংলাদেশবিরোধী প্রচারে জড়িত। তাদের প্রতিবেদনকে আদর্শ হিসেবে ধরে নেয়ার কারণ নেই।’

এই সিনিয়র সাংবাদিক আরও বলেন, ‘জঙ্গি মোকাবিলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র‍্যাব সফল ভূমিকা রেখেছে। ভুলভ্রান্তি যেকোনো বাহিনীতে থাকতে পারে। আমেরিকার সেনাবাহিনী নানা দেশে অপরাধ করছে। এসব বাহিনী অপরাধ করলে তার প্রতিকারও সেই দেশে আছে।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে বিতর্কিত করতে চেয়েছিলেন বার্গম্যান

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি জড়িতদের বিচারের বিরোধিতা করে নিজের ব্লগে লেখালেখি করে আলোচনায় এসেছিলেন ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাসহ সব ধরনের অপকর্মে সম্পৃক্তদের বিচার শুরু হলে তা নিয়ে নেতিবাচক লেখালেখিও করেন বার্গম্যান।

তার বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার হয়েছিল, তিনি সেই বিচারের বিপক্ষ অবলম্বন করেন। বিচার ঠিকমতো হচ্ছে না, আন্তর্জাতিক আইন মেনে হচ্ছে না, সেই জিনিসটি তারা বারবার বলতে চাচ্ছেন। তার মানে, তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার।’

তার লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। অধিকাংশ লেখাতেই তিনি শুধু সেসব মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন, যারা বিএনপি এবং জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আর এটা সবাই জানে, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান সহযোগী, যাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানিরা এ দেশে গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।

এদের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকেই লেখালেখি শুরু করেন বার্গম্যান। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। আর নিজেদের ঘৃণ্য অপরাধ ঢাকার জন্য শুরু থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে শহীদের সংখ্যা কমিয়ে বলার চেষ্টা করে আসছে জামায়াত-বিএনপি।

বার্গম্যান তাদের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এবং সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছে। এমনকি বিচারাধীন বিষয়ে উসকানি ছড়ানোর দায়ে একপর্যায়ে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ইতিহাস বিকৃতির দায়ে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তাকে অভিযুক্ত করে।

এদিকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ড. কামাল ছিলেন বাংলাদেশের বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রধান সমন্বয়ক। এই কারণেই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে দীর্ঘ সময় লেখালেখি করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন বার্গম্যান।

অপেশাদার আচরণের কারণে তিনি দ্য নিউ এজ পত্রিকা এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে চাকরিচ্যুত হন। তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার তোয়াক্কা না করার অভিযোগ ছিল।

কার ফান্ডে চলে নেত্র নিউজ?

ড. কামাল হোসেনের জামাতা ও ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যে কারণে নেত্র নিউজ চালাতে ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) থেকে একটি মোটা তহবিল পাচ্ছেন বার্গম্যান।

নেত্র নিউজ এনইডির দায়িত্ব পালন করছে। তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছামতো শাসন পরিবর্তনের ক্রিয়াকলাপে জড়িত মিডিয়া ও অন্যান্য সামাজিক প্ল্যাটফর্মের জন্য বাজেট সংগ্রহ করে।

দীর্ঘদিন ধরে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। নেত্র নিউজ এখন বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর প্রচারের দায়িত্ব পালন করছে। করোনা মহামারির সময় টিকা ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল। সম্পাদক ডেভিড বার্গম্যান ও বাংলা সংস্করণের সম্পাদক হিসেবে আছেন সুলতানা ইসরাত জাহান। এর আগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ইসরাত।

এনইডি হলো ‘দ্বিতীয় সিআইএ’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে ‘গণতন্ত্রকে’ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম পদাতিক সেনা হচ্ছে দ্য ন্যাশনাল ইনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি (এনইডি)। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে এই সংস্থাটিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে পুতুল সরকার বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে গোপন তৎপরতা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এক সময়ে তারা দেখল যে কেবল গোপন মিশন দিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করা যাচ্ছে না।

তখন তারা প্রকাশ্য সরকারি-বেসরকারি কলাকৌশল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বোধ করতে লাগল। ১৯৮৩ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা ভাবেন তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান। যার ফল হচ্ছে এনইডি।

সাদা চোখে দেখলে মনে হবে, এনইডি হচ্ছে একটি সাধারণ এনজিও, যারা দেশের বাইরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সমর্থন দিয়ে আসছে। কিন্তু টার্গেট দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডেও সহায়তা দিচ্ছে এই সংস্থাটি। এনইডির তহবিলের জন্য হোয়াইট হাউস, মার্কিন কংগ্রেস ও দেশটির সরকারের অনুমোদন দরকার পড়ে।

১৯৯১ সালে ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এনইডির প্রতিষ্ঠাতা অ্যালান ওয়েনস্টেইন বলেন, পঁচিশ বছর আগে সিআইএ যেসব গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো, এখন তা করছে এনইডি।

এরপর থেকে বিশ্বজুড়ে ‘দ্বিতীয় সিআইএ’ নামে ডাকা হয় এনইডিকে। এটির অধীন চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিউটি, ন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, দ্য আমেরিকান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল লেবার সলিডারিটি ও দ্য সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ।

বিভিন্ন দেশে বর্ণবাদী সহিংসতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, রাজনৈতিক সংকট, মিথ্যা ও গুজব প্রচারসহ বিভিন্ন তৎপরতায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছে এনইডির এই চার প্রতিষ্ঠান। সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে দেয়া, জর্জিয়ায় রোজ বিপ্লব, ইউক্রেনে অরেঞ্জ বিপ্লব ও মধ্যপ্রাচ্যের আরব বসন্তের জন্য এনইডিকে দায়ী করা হচ্ছে।

১৯৮৯ সালের ২৭ আগস্ট ‘হাউ উই হেল্পড সলিডারিটি উইন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। যাতে বলা হয়, পোল্যান্ডের সরকারকে উৎখাতে দেশটির শ্রমিক ইউনিয়ন সলিডারিটিকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে এনইডি। মিসর, ইয়েমেন, জর্ডান, আলজেরিয়া, সিরিয়া, লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আরব বসন্তে মার্কিনপন্থি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এনইডি।

এরমধ্য দিয়ে এটি জনগণের মধ্যে সরকারবিরোধী নানা অপপ্রচার চালিয়ে যায়। এসব উসকানির মধ্য দিয়ে এক সময় আরব বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে ঢুকে যায়। ব্যাপক সামাজিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয় অঞ্চলটিতে, যার রেশ এখনো কাটেনি।

সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘এনইডি বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশের জন্য অর্থ দিচ্ছে। বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানকে তারা যেমন অর্থ দিচ্ছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মার্কিন অর্থ পাচ্ছে। আমেরিকার অর্থ যারা পায়, তারাতো তাদের স্বার্থেই কাজ করবে। রাশিয়ার অর্থ পেলে তাদের স্বার্থে কাজ করবে। চীনের অর্থ পেলে তাদের স্বার্থে কাজ করবে, এটিই স্বাভাবিক। আমাদের দেখতে হবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ। আমরা চাই না, ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদানে অর্জিত দেশ, আমাদের বিরুদ্ধে কেউ আন্তর্জাতিকভাবে সংঘটিত অপপ্রচার চালাক। সেটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’

এনইডি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতীয় প্রবীণ সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক বলেন, ‘ইট ইজ আ ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেজিম চেঞ্জ অর্থাৎ এটি সরকার পরিবর্তনের একটি হাতিয়ার। বিভিন্ন জায়গায়, যেখানে সরকার পতন ঘটাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে এনইডির মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসহ সংস্থাকে অর্থ দেয়া হয়। তারা সেই সরকারের বিরুদ্ধে একটি প্রচার শুরু করে।’

র‌্যাব নিয়ে তথ্যচিত্রের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য

এদিকে র‌্যাব নিয়ে জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এ দাবি করেন।

প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে সেহেলী সাবরীন বলেন, র‌্যাবকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। প্রতিবেদনটিতে র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। উচ্চপদস্থ রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে এই এলিট বাহিনীকে ব্যবহার করছেন, এমন অভিযোগও তোলা হয়, যার সবই ভুয়া।

প্রতিবেদনে বেশিরভাগ তথ্যই পুরোনো এবং সেকেলে দাবি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, নিজস্ব অনুসন্ধানের এ প্রতিবেদনটি অসঙ্গত এবং অভিযোগগুলো অসত্য।

আরো সংবাদ পড়ুন

Designed by: ATOZ IT HOST