বাগমারা সংবাদদাতাঃ
আজ মঙ্গলবার ৫ জুলাই, ২০২২ – সকাল ৮.৩০ মিনিটে ‘তাহেরপুর শহিদ পরিবার’ ও ‘বধ্যভূমি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর যৌথ উদ্যোগে “৫ জুলাই – তাহেরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।
তাহেরপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নিরবতা ম করা হয় এবং পরবর্তীতে একটি সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ।
সমগ্র এই অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনীল কুমার দাস ঝনু, মুক্তিযুদ্ধকালীন তাহেরপুর কলেজ ছাত্রলীগের (তৎকালীন) সভাপতি আইয়ুব আলী সর্দার, তাহেরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ও শহিদ-সন্তান এস এম হাফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা-প্রজন্মের বিশিষ্ট সংগঠক ও বধ্যভূমি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মকবুল হোসেন শাহ মকু, পচামাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য রফিকুল ইসলাম সরকার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বজলুর রহমান শাহীন, অনুষ্ঠানটিতে আরো উপস্থিত ছিলেন, কনিষ্ঠপুত্র ও বিশিষ্ট ব্যাংকার আবদুল মজিদ, গণহত্যা , সাবেক ছাত্রইউনিয়ন নেতা ও বধ্যভূমি বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্নআহ্বায়ক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, এবং শহিদপৌত্র সেলিম মাহমুদ ও মশফিকুর,মাহাবুর রহমান বিপ্লব প্রভাষক তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজ, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জিল্লু রহমান মন্ডল, সহ স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিবর্গ ।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই সোমবার – এই দিনে, পাকিস্তানপন্থি এদেশীয় দোসর-দালালদের শায়েস্তা করতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি স্থানীয় ওহিদুর বাহিনী কর্তৃক তাহেরপুর হাটে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হলে, দোসর চক্রের একাধিক দালাল হতাহত হয় । ঘটনাটির প্রতিক্রিয়াস্বরুপ এদিন দিবাগত রাত ৮:৩০ মিনিট নাগাদ পাকিস্তানি মিলিটারির কয়েকটি সাঁজোয়া ট্রাক তাহেরপুর বাজারে প্রবেশ করে এবং স্থানীয় দালাল রাজাকারদের সহযোগিতায় বাজারের উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত মথুরাপুর গ্রামে চয়েন উদ্দিন শাহ্-র বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় । এ সময় চয়েন উদ্দিন শাহ্ ও তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মজিবুর রহমানসহ অপর তিন স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক, যথাক্রমে – শিবেন্দ্রনাথ সাহা শিবু, সেকেন্দার খন্দকার ও আনছার আলীকে আটক করা হয় । পরবর্তী সময়ে তাদেরকে আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায় নি।
ধারণা করা হয় যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে অবস্থিত পাকিস্তানি মিলিটারির তৎকালীন কুখ্যাত টর্চারসেলে তাদেরকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, শহিদ চয়েন শাহ্ ছিলেন বাগমারা থানা সংগ্রাম পরিষদের একজন অন্যতম সদস্য এবং তার পুত্র মজিবুর রহমান ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের একজন সক্রিয় কর্মী ; উপরন্ত যুদ্ধকালীন সময়ে তাদের বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের একটি অন্যতম শেল্টার হিসাবেও ব্যবহৃত হতো ।