নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সেই কথিত সাংবাদিক নেতা আলতাব মন্ডলকে নানা নাটকীয়তা শেষে অবশেষে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগমারা থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগনিজেন্স আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক গত ২৬ জানুয়ারি আলতাব মন্ডলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে এলাকা ছেড়ে পলাতক ছিলো কথিত সাংবাদিক নেতা আলতাব মন্ডল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার বানাইপুর গ্রামের গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল কালামের ইটভাটার ব্যবসা রয়েছে। ইটভাটার ব্যবস্যা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুমকী দিয়ে বাদীর কাছে মোটা অংকের চাদা দাবি করেন মামলার আসামী আলতাব মন্ডল। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি আসামী আলতাব বাদীর ইটভাটার অফিস ঘরে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি আবারো আসামি আলতাফ মন্ডল বাদের ইটভাটার অফিস কক্ষে গিয়ে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। বাদী আবুল কালাম এই টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামি আলতাফ মন্ডল একটি চাকু বের করে বিবাদের গলায় ধরে। নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়ী কালাম মামলায় বর্ণিত ২ নং সাক্ষীর মাধ্যমে আবারো ২০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য হোন। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবুল কালাম বাগমারা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করতে বলেন। এরপর বাদী আবুল কালাম গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগনিজেন্স আদালত-২ এ মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নির্দেশ দেন। আদালতের আদশে পিবিআইয়ের রাজশাহীর জেলা ইউনিটের উপ পরিদর্শক মতিউর রহমান মামলার তদন্ত শুরু করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, বাদীর মানিত ৩ জন সাক্ষীসহ মোট ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে মামলার তদন্তে। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭০ (২) ধারা মোতাবেক সাক্ষীদের মুচলেকা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলাটি সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ, তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় বাদীর আনীত অভিযোগ আসামি আলতাব মণ্ডলের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩৮৫/ ৫০৬ ধারার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই এর রাজশাহী জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক মতিউর রহমান জানান, আদালতের আদেশে মামলার তদন্ত করে বাদীর অভিযোগ সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক হোসেন জানান, আলতাব মন্ডলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন বিজ্ঞ আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে থানার এস আই রিপন তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।