নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন না করেই বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ মার্চ দেশব্যাপী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন পালন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হলেও সরকারের এই আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে ক্লাব গুলোর মধ্যে বিতরণ না করেই উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন পুরো টাকা আত্মসাত করেছেন। কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে থাকা জেন্ডার প্রমোটর ও প্রশিক্ষকদের সাথে কথা বলে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় দুর্গাপুর উপজেলার ৮টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে গত ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন পালন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করতে কেক ও এবং ব্যানার বাবদ এক হাজার টাকা করে মোট ৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন না করেই পুরো টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ৮টি ক্লাবেই পৃথকভাবে কেক কাটার আয়োজন করার কথা থাকলেও কোনো ক্লাবেই কেক কাটা হয়নি। এমনকি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিও গোপন করে রাখেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) জয়ন্ত কুমার সিকদার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে ১৫ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আইবাস কোড থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে ক্লাব গুলোর মধ্যে এক হাজার টাকা করে বিতরণ করতে হবে। কিন্তু বরাদ্দকৃত ওই অর্থ উত্তোলন করা হলেও ক্লাব গুলোতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন না করেই পুরো টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন।
পৌরসভা এলাকার কিশোর-কিশোরী ক্লাবের প্রশিক্ষক রাশেদ জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করতে কেক এবং ব্যানার বাবদ যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তা তাঁদের দেয়া হয়নি। অধিদপ্তর থেকে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি গোপন করে পুরো টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন।
উপজেলা জেন্ডার প্রমোটর শফিকুল ইসলাম স্বপন জানান, তার আওতায় ৪টি ক্লাব রয়েছে। কোনো ক্লাবেই কেক বা ব্যানারের জন্য টাকা দেয়া হয়নি। এমনকি বিষয়টি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাদেরকে জানাননি।
জেন্ডার প্রমোটর খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ক্লাব গুলোতে আলাদা ভাবে কেক কাটা হয়নি। তবে ওইদিন উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের সাথে একটি যৌথ প্রোগামে তাঁরা অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনের সাথে মুঠোফোনে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, উর্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়ে তাঁর সাথে কথা বলতে বলে মুঠোফোন বন্ধ করে দেন।
জেলা মহিলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শবনম শিরিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি অফিসের বাইরে আছেন জানিয়ে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে অফিস সময়ে কথা বলতে বলেন।