স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: রাজশাহীর দুর্গাপুরের দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে গোপনে কলেজের চারটি আমগাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় সচেতন মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। দিনভর চলেছে নানা গুঞ্জন।
জানা গেছে, শনিবার ভোররাত থেকে কলেজ ভবনের প্রধান ফটকের পাশে থাকা চারটি আমগাছ কাটা শুরু হয়। সকাল ১০টার আগেই গাছ গুলো কেটে গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল মতিন যোগসাজশ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাছ গুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা চারটি আমগাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় অর্ধলাখ টাকা।
দাওকান্দি কলেজের একজন শিক্ষক এবং ওই কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দাওকান্দি কলেজের নিজস্ব ভূসম্পত্তি, পুকুর ও আমবাগান রয়েছে। এগুলো নামমাত্র লীজ দিয়ে সেই অর্থ কলেজ ফান্ডে জমা না রেখে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীকে হাত করে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে অধ্যক্ষ মগেরমুল্লকে পরিণত করেছেন। নিজের খেয়াল খুশিমতো পরিচালনা করেন কলেজের সার্বিক কার্যক্রম।
বিধিমতে, তাজা গাছ কাটার নিয়ম না থাকলেও তা মানা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ কাটার নিয়ম থাকলেও সভা আহবান করে রেজুলেশনের মাধ্যমে বন বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদনের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, কলেজের আমবাগান বা আমগাছ গুলো কাঁটাখালি এলাকার জনৈক উজ্জ্বল নামের এক ব্যাক্তির কাছে লীজ দেয়া হয়েছিলো। আর ক’দিন বাদেই গাছে থাকা আম গুলো পেড়ে নিতেন ব্যবসায়ী উজ্জ্বল। লীজ দেয়া গাছ গুলোর মধ্যে ওই চারটি আমগাছও ছিলো। আম গুলো পেড়ে নেয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি তাকে।
ব্যবসায়ী উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, দাওকান্দি সরকারি কলেজের আম গাছগুলো এবার লীজ নিয়েছিলেন তিনি। কেটে নেয়া গাছ গুলোতেও আম ছিলো। কিন্তু তাকে না জানিয়েই গোপনে কলেজ কর্তৃপক্ষ গাছ গুলো কেটে নেয়ায় তাঁর কিছু লোকসান গুনতে হবে।
জানতে চাইলে দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক গাছ কাটার কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন, গাছ গুলো আকারে ছোট। কলেজের পাশেই মসজিদ নির্মাণের জন্য গাছ গুলো কাটা হয়েছে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভা ডেকে রেজুলেশন করে উপজেলা একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমতি নিয়ে গাছ গুলো কাটা হয়েছে বলেও দাবি করেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক।
উপজেলা বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দাওকান্দি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার দপ্তরে গাছ কাটার কোনো আবেদন করেননি। এমনকি এই বিষয়টি আমার জানাও নাই।