নিউজ ডেস্ক: আয়ুর্বেদিক ওষুধের নামে মাদক মেশানো পানীয় উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে র্যাব।
পুরান ঢাকার নারিন্দা, কামরাঙ্গীরচর, নাজিরাবাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক ছয়জন হলেন ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত, মো. রাসেল, মো. হৃদয়, মুরসালিন আহমেদ, মো. নান্টু ও সবুজ মিয়া।
র্যাবের ভাষ্য, অভিযানে আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে মাদকমিশ্রিত সাড়ে ৩ হাজার বোতল পানীয়, কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবার গুঁড়া ও গাঁজাসদৃশ বস্তুসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ব্রিফিংয়ে জানান, কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া এলাকায় একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে এক ধরনের পানীয় বিক্রি হচ্ছে বলে কিছু অভিভাবক র্যাবকে জানান। এ পানীয় পানের পর ছেলেরা মাদকাসক্তদের মতো আচরণ করে বলেও জানান অভিভাবকরা।
সে অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-২-এর গোয়েন্দা দল গোপনভাবে আয়ুর্বেদিকের দোকান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠায়। পরীক্ষায় পানীয়তে গাঁজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ ছাড়া তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণও পাওয়া যায়, যা গ্রহণে শরীরে নানা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে খন্দকার আল মঈন জানান, তারা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্য মেশানো পানীয় প্রস্তুত ও বিক্রি করে আসছিল। কথিত আয়ুর্বেদিক পানীয়ের প্রতি বোতলের দাম ১৬০ থেকে ২০০ টাকা।
তিনি জানান, চক্রটি গত দুই-তিন বছর ধরে পানীয় উৎপাদন ও বিক্রি করছে। চক্রের সদস্যরা রাজধানীর নারিন্দার কারখানায় পানীয় উৎপাদন করে কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরাবাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় আউটলেটের মাধ্যমে তা বিক্রি করে।
র্যাবের কমান্ডার জানান, রাজধানীর বিভিন্ন আউটলেটে দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ বোতল মাদকমিশ্রিত পানীয় বিক্রি হতো। মাদক বিক্রয়কারী চক্রের সদস্যরা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করত। বিভিন্ন সময়ে বাসা পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থানও পরিবর্তন করত তারা।
তিনি আরও জানান, পানীয়টির দাম কম হওয়ার পাশাপাশি সহজলভ্য হওয়ায় তরুণদের মধ্যে এর চাহিদা বাড়ছিল।